পর্ব-১
৭১ এর ১৬ই ডিসেম্বরে দেশের চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হবার ঠিক দুদিন আগে দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের ধরে নিয়ে গিয়ে কেন হত্যা করা হয়েছিল জানেন?
কারণ দেশটা ভৌগোলিকভাবে স্বাধীন হলেও যেন বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে কোনোদিন মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে –এই উদ্দেশ্যে। স্বাধীনতার এত বছর পরে এসে আমরা নিশ্চয়ই এই পরিকল্পনার ফলাফলটা উপলব্ধি করতে পারছি ।
একটা শরীরকে full active রাখার জন্য সবগুলো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের প্রয়োজন হলেও তার মস্তিষ্ক বা ব্রেন যেমন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তাকে সঠিক দিকনির্দেশনা দেবার জন্য, ঠিক তেমনি একটি দেশের জন্য সব ধরনের পেশার মানুষের প্রয়োজন হলেও দেশপ্রেমিক, সৎ বুদ্ধিজীবীদের প্রয়োজন দেশটিকে সঠিক পথে পরিচালিত করার জন্য। তাই কোনো দেশকে যদি আপাতদৃষ্টিতে স্বাধীন রেখেও সাংস্কৃতিক, বাণিজ্যিক, চিকিৎসা সহ বিভিন্ন খাতে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয় তবে তাদেরকে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে পঙ্গু করে রাখাটা সবার আগে জরুরী।
এই সূদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দেশে বিগত কয়েক বছর যাবত শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে একটার পর একটা এক্সপেরিমেন্ট করা হচ্ছে যেন দেশের স্বাধীনতার পরবর্তী প্রজন্ম চিন্তাশীল ও যোগ্য হয়ে গড়ে উঠতে না পারে।
যুগের সাথে তাল মিলিয়ে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ক্রমাগত আপডেট করতে হবে অবশ্যই, কিন্তু সেটা হতে হবে দেশের বাস্তবতা ও সক্ষমতার সাথে মিল রেখে। গত বছর থেকে যে নতুন কারিকুলাম চালু করা হয়েছে তার নেগেটিভ দিকগুলো নিয়ে অনেক লেখালেখি করেছি এক বছর যাবত। আমার মতো সচেতন ও ভুক্তভোগী অনেক অভিভাবকই অনলাইনে, অফলাইনে আন্দোলন করেছেন কিন্তু ফলাফল শূন্য। দেশের সাধারণ মানুষের মতামতের কোন মূল্যই যে ক্ষমতাসীনদের কাছে নেই তা আরো একবার প্রমাণিত হয়েছে এই আন্দোলনের ব্যর্থতা থেকে।
তাই আজ আর এই টপিকে লিখবো না। আজ বরং নতুন একটা বিষয়ে লিখতে চাই।
কেন ভবিষ্যৎ নিয়ে শংকা আছে জেনেও আমি আমার মেয়েকে এই বাংলা মিডিয়ামে পড়াচ্ছি /পড়াতে চাই ?
লেখাটা অনেকটা নিজের জন্যই self clarification. সেইসাথে আমার মতো যারা অসহায় অভিভাবক তাদের জন্য একটা আশার আলো হতে পারে।
আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা বহু আগে থেকেই তিনটি শাখায় বিভক্ত। মাদ্রাসা, বাংলা মিডিয়াম এবং ইংলিশ মিডিয়াম। এর মধ্যে বাংলা মিডিয়ামে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ ছেলে-মেয়েরা পড়ে, ইংলিশ মিডিয়ামে দেশের উচ্চবিত্ত পরিবারের ছেলেমেয়েরা পড়ে আর মাদ্রাসায় দেশে নিম্নবিত্ত এবং ধার্মিক পরিবারের ছেলেমেয়েরা পড়ে। এটাই হচ্ছে মোটা দাগে এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রচলিত চিত্র।
ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ুয়ারা ’ও লেভেল’ পাস করার পর অধিকাংশই দেশের বাইরে চলে যায়, মাদ্রাসার অধিকাংশ ছাত্রই আবার মাদ্রাসা ,মসজিদে বা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে আর বাংলা মিডিয়ামে পড়া দেশের মেজরিটি ছাত্র-ছাত্রী দেশে থেকে দেশের প্রশাসন, শিক্ষা, চিকিৎসা ,অর্থনীতি আইন-শৃঙ্খলা সহ সব ক্ষেত্রগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে— এই বাস্তবতা আমরা বহু বছর থেকেই দেখে আসছি। তাই দেশকে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে এই বাংলা মিডিয়ামের শিক্ষার্থীদের টার্গেট করতে হবে এটাই স্বাভাবিক।আর এই লক্ষ্য নিয়েই বাংলা মিডিয়ামের শিক্ষার্থীদের বারবার গিনিপিগ বানিয়ে তাদের কনফিউজড করে দেয়া হচ্ছে।
তবে সাম্প্রতিক সময়ের আরেকটি বাস্তবতা হচ্ছে বিগত কয়েক বছর যাবত দেশের বাংলা মিডিয়াম থেকে পাস করা (’জেনারেল পড়ুয়া ’-এই পরিচয়ে বেশি পরিচিত) একটা শ্রেণীর মধ্যে ধর্মীয় সচেতনতা এসেছে আলহামদুলিল্লাহ । ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক, লেখক, ব্যবসায়ীসহ একটা শ্রেণী যারা বাংলা মিডিয়াম থেকে পাশ করেছেন তারা নিজেরা স্ব-উদ্যোগে ইসলামিক বিষয়ে পড়াশোনা করছেন এবং দাওয়াতি কাজের মাধ্যমে পরবর্তী প্রজন্মকেও সচেতন করার চেষ্টা করছেন ।
এই শ্রেণীটির খুব দ্রুত জনপ্রিয়তা পাওয়ার প্রধানতম কারণ হচ্ছে তারা নিজেরা জেনারেল লাইন থেকে পাস করা বলে তারা সহজেই দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের সাথে রিলেট করতে পারছেন । এমন না যে তারা যেসব ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করেছেন তা দেশের মাদ্রাসা ব্যাকগ্রাউন্ডের স্টুডেন্টরা এতদিন জানতেন না কিন্তু তাদের সাথে স্পষ্টতই দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের বাচনভঙ্গি, ভাষা, উপস্থাপনাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে একটা দূরত্ব রয়েছে, যার কারণে তারা এতদিন তাদের ধর্মীয় জ্ঞানকে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারেননি।
এখন এই যে নবজাগরণ শুরু হয়েছে তা অব্যাহত রাখতে এবং আরো বিস্তৃত করতে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে একই সাথে দ্বীনী ও দুনিয়াবী (প্রচলিত শব্দ ব্যবহার করলাম) শিক্ষায় শিক্ষিত করা খুব জরুরী। আর এজন্যই আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া যাবে না । তাদের মাঝে দাওয়াতী কাজ করতে হলে তাদের মাঝে থেকেই করতে হবে। তাদের চিন্তার ধরন বুঝে, তাদের সাথে মিশে, তাদের ভাষায় তাদেরকে মোটিভেট করতে হবে। যদিও ব্যাপারটা অনেকটা রিস্কি, প্রতি পদে পা পিছলে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে, তবে ময়লা পরিষ্কার করে সবার চলার জন্য উপযোগী রাস্তা তৈরি করতে হলে তো নিজের শরীরে ময়লা লাগার রিস্ক নিতেই হবে।
আর এই নিয়তে আমি আমার মেয়েকে বাংলা মিডিয়ামে পড়াচ্ছি যেন সে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে না যায়। সবাই যদি হতাশা থেকে বাংলা মিডিয়াম থেকে চলে যায় তবে যারা নিরুপায় হয়ে রয়ে যাবে তাদেরকে বিপথে পরিচালিত করা সহজ হয়ে যাবে, দূরভিসন্ধিকারীদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সহজ হয়ে যাবে।
তাই আমরা যারা সচেতন এবং শিক্ষিত অভিভাবক আছি তাদেরকে নিজেদের সন্তানদেরকে একেক জন যোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে যাদের মধ্যে সততা, নৈতিকতা থাকবে, যারা নিজের স্বার্থের জন্য দেশকে বিক্রি করে দেবে না, বরং তাতে বাঁধা দেবে। যাদের কর্মক্ষেত্র হবে ইহকাল কিন্তু ফোকাস থাকবে পরকালে।
জানি, এই পথ সহজ নয়, বন্ধুর। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি–”নিয়ত গুণে বরকত।” তাই আমি আমার মেয়েকে এই নিয়তে সাধারণের মাঝে রেখেই বড় করতে চাই ইনশাআল্লাহ।
পর্ব-২
যে সময়ে এই লেখাটা লিখছি, সেই সময়ে দেশের শিক্ষাঙ্গনে একটা অস্থির অবস্থা বিরাজ করছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবীতে রাজপথে আন্দোলন করছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কর্মবিরতি পালন করছে, মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের ষান্মাসিক মূল্যায়ন উৎসব এর প্রশ্ন ফাঁস এর খবর প্রকাশিত হচ্ছে, এমনকি চলমান এইচ.এস.সি পরীক্ষার প্রশ্নও ফাঁস হচ্ছে কোনো কোনো জায়গায়।
আর এসব হতাশাজনক খবর দেখে অনেকেই মন্তব্য করছেন, এই দেশ আর বসবাসের উপযোগী নেই, বিদেশে চলে যাওয়াই একমাত্র সমাধান।
সত্যিই কি তাই? দেশ কখনও অনুপযোগী হয় না, হয় দেশের মানুষ। দেশ মানে তো ভৌগলিক অবস্থান মাত্র, মানুষ নিয়েই তৈরি হয় দেশ, দেশে-দেশে পার্থক্য হয় মানুষের কারণেই। তাই দেশ অনুপযুক্ত হয়ে গেছে মানে দেশের মানুষ নষ্ট হয়ে গেছে। সততা, নৈতিকতা, মূল্যবোধ হারিয়ে গেছে।
গত কয়েকদিনের কোটা বিরোধী আন্দোলন দেখে আবারও আশান্বিত হয়ে ভাবছি, দেশ থেকে পালানো কোনো সমাধান নয়। বরং দেশের মানুষকে এভাবেই আবার ঘুরে দাঁড়াতে হবে, প্রমাণ করতে হবে সবাই নষ্ট হয়ে যায়নি, বরং নষ্টদের সংখ্যাই কম।
গত পর্বে বলেছিলাম, আমার মেয়েকে এত কিছুর পরও বাংলা মিডিয়াম এ পড়াচ্ছি যেন সে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে না যায়। সাথে এও বলেছিলাম এই পথ সহজ নয়, বন্ধুর।
এখানে টিকে থেকে সঠিক গন্তব্যে পেঁৗছতে হলে তাদেরকে একা ছেড়ে দিলে হবে না,অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে, তাদের গাইডলাইন দিতে হবে।
আজকের পর্বে বাংলা মিডিয়ামের অভিভাবকদের জন্য কিছু গাইডলাইন দিতে চাই, যা আমি নিজে মেইনটেইন করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।
প্রথমত: বাংলা মিডিয়ামে বর্তমানে যে পাঠ্য বই আছে (নতুন কারিকুলামের বইয়ের কথাই বলছি) সেগুলোর কিছু বিষয়ের বই যেমন- বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান, ধর্ম, ডিজিটাল প্রযুক্তি এগুলো বেশ তথ্যবহুল । এই বইগুলোর প্রতিটি অধ্যায় ভালোভাবে রিডিং পড়াতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো মার্কিং করে, সেখান থেকে প্রশ্ন তৈরি করে মুখস্থ করাতে হবে,কঠিন অংশগুলো লেখাতে হবে। স্কুলের পরীক্ষা,মূল্যায়ন উৎসবে এখান থেকে প্রশ্ন থাকুক বা না থাকুক,তাদেরকে এভাবে পড়াতে হবে জানার জন্য। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান/ প্রাইভেট টিউটর/ কোচিং এর ভরসায় ওদের ছেড়ে দিলে চলবে না। নিজেদের উদ্যোগী হয়ে বই পড়াতে হবে।
যদিও সব বাচ্চারা এভাবে পড়তে চাইবে না, কিন্তু তাদেরকে মোটিভেট করতে হবে অভিভাবকদেরই। আমি আমার মেয়েকে প্রায়ই কুরআনের এই আয়াতটি স্মরণ করিয়ে দেই ,
”যে জানে আর যে জানে না সে কখনো সমান হতে পারে না।” (সূরা আয-যুমার:৯)
সেই সাথে এটাও বলি যে, কোনো জ্ঞানার্জনই বৃথা যায় না, জীবনে কখনও না কখনও সেটা কাজে লাগে।
দ্বিতীয়ত: পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি প্রচুর বাইরের বই পড়তে দিতে হবে । ইদানীং সব বয়সদের জন্যই ইসলামিক মেসেজসহ বই পাওয়া যায়, সেগুলো কিনে দিতে হবে। এছাড়া ভ্রমণ কাহিনী, গোয়েন্দা কাহিনী, ইতিহাস, রম্য রচনা, গল্প, উপন্যাস (বয়স উপযোগী) পড়তে দিতে হবে। এসব বই পড়লে ওদের কল্পনাশক্তি, ভৌগলিক জ্ঞান বাড়বে, শব্দভাণ্ডার সমৃদ্ধ হবে, বাক্য গঠন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। পাঠ্য বইয়ের ঘাটতি অনেকটাই পূরণ করতে হবে বাইরের বই পড়ার মাধ্যমে।
তৃতীয়ত: ’স্কিল ডেভেলপমেন্ট’ এর দিকে মনোযোগী হতে হবে এখন থেকেই। গতানুগতিক পড়াশোনা শেষ করে তারপর ক্যারিয়ার গঠনের কথা চিন্তা করবে— সেইদিন এখন আর নাই। একাডেমিক সার্টিফিকেটের মূল্য অবশ্যই আছে, তবে তার সাথে এক্সট্রা স্কিল ডেভলপমেন্ট যে কাউকে দ্রুততম সময়ে ক্যারিয়ার বিল্ড আপ এর ক্ষেত্রে এগিয়ে রাখে। তাই যার যে বিষয়ে আগ্রহ আছে তাকে সেই বিষয়ে ট্রেইন আপ করে তুলতে হবে অল্প বয়স থেকেই।
এখন অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের কোর্স করার অবারিত সুযোগ রয়েছে। ফটোগ্রাফি, ভিডিওগ্রাফি, কনটেন্ট রাইটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন—- যার যেটাতে আগ্রহ আছে, তাকে সেই বিষয়ক কোর্স করাতে হবে অবসর সময় বা বড় বন্ধের সময়গুলোতে।
প্রযুক্তির এই উৎকর্ষতার যুগে তারা যেহেতু অলরেডি ডিভাইস এডিক্টেড হয়েই গেছে, সেটাকে টিকটক দেখা বা গেইম খেলার কাজে অপচয় না করে ভালো কাজে ব্যবহার করতে হবে।
চতুর্থত: দেশীয়, আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিষয়ে তাদেরকে স্বচ্ছ ধারণা দিতে হবে। আমরা অনেকেই ভাবি রাজনীতি বিষয়টা অনেকটা জটিল এবং এটা সবার বোঝা দরকার নেই। অথচ রাজনীতি এমন একটা বিষয় যার গতিপ্রকৃতি না জানলে অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের অনেক বড় বড় ঘটনা প্রবাহের কারণ বোঝা যায় না ।
আমরা যেহেতু খুব দ্রুত শেষ জমানার দিকে আগাচ্ছি তাই আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যতের রাজনীতির গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে ধারণা দেওয়া খুব জরুরী। ওদের নিজেদের যখন ক্লিয়ার কনসেপ্ট থাকবে তখন ওরা অন্যদের দ্বারা মোটিভেটেড হবে না বরং নিজেরাই অন্যদের গাইড করতে পারবে।
পঞ্চমত: সর্বশেষ যেটা গুরুত্বপূর্ণ তা হলো সন্তানদেরকে মুসলিম হিসেবে জীবনের মূল উদ্দেশ্য সম্পর্কে ধারণা দেয়া। মহান আল্লাহ যে আমাদেরকে এই পৃথিবীতে তার খলীফা হিসেবে প্রেরণ করেছেন এই বিষয়টা তাদের মনে, মগজে গেঁথে দিতে হবে। শুধু হুজুর রেখে কুরআন খতম দেয়া, নামাজে মুখস্থ কিছু সূরা পড়তে পারা—যে ইসলামের পূর্ণাঙ্গ রূপ নয়, এটা তাদের ভালোভাবে বুঝাতে হবে। একজন মুমিন দুনিয়াতে যে জ্ঞানই অর্জন করবে, যে সেক্টরেই ক্যারিয়ার গড়ে তুলবে—তার আল্টিমেট উদ্দেশ্য যে মুসলিম উম্মাহর কল্যাণে কাজে লাগানো হবে –এটা তাদের বোঝাতে হবে। সেই সাথে শেষ জমানার ফিতনা গুলো সম্পর্কে সঠিক ধারণা দিতে হবে পরিবার থেকেই।
সবশেষে বলতে চাই মুমিন কখনো হতাশ হয় না। মুমিনের জীবনে বাধা-বিপত্তি আসবেই, নতুন কারিকুলামের এই উচ্চভিলাষী শিক্ষা ব্যবস্থাকেও আমাদের সন্তানদের জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে হবে। তাদেরকে এই লড়াইয়ে সাহায্য করতে হবে। ময়দান ছেড়ে পিছু হটলে চলবে না।