৬ষ্ঠ পর্বের অতিথি পরিচিতি
এই পর্বের অতিথি দুজনই ডাক্তার এবং দুজনেই প্রবাসী। একজন নন-মুসলিম দেশে কাজ করছেন ডাক্তার হিসেবে এবং অপরজন বাংলাদেশের শীর্ষ স্থানীয় মেডিকেল থেকে এমবিবিএস শেষ করেও প্রবাসে গিয়ে ডাক্তারি পেশা কন্টিনিউ করেননি। তাদের দুজনের ভিন্ন ধরনের গল্প শুনেছি আমরা এই পর্বে।
ডাক্তারী পেশায় জেনে বুঝে ইসলাম প্র্যাক্টিস করছেন এমন নারী কেন দরকার?
এক কথায় সবাই হয়তো বলবেন পর্দা রক্ষার জন্য।
কিন্তু আমাদের মনে হয় এটা তেমন জরুরী নয়, সত্যিটা হচ্ছে ফিকহ এর দিক থেকে অসুস্থ অবস্থায় আমাদের যদি পুরুষ ডাক্তার দেখাতেই হয় তাহলে সেটাকে ঠিক পর্দার লঙ্ঘন বলা যাবে না। কিন্তু নারী চিকিৎসক আমাদের দরকার আরও জরুরী কারণে- সেটা হচ্ছে বিভিন্ন ইবাদাতের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য। কী রকম?
যেমন , রামাদ্বানে আপনি কোনো অসুস্থতায় ভুগছেন, বুঝতে পারছেন না যে রোযা না রাখা আপনার জন্য জায়েজ হবে নাকি। খুব রক্ষণশীল ফতওয়ার সাইটগুলোও আপনাকে কী বলবেন জানেন? বলবে দ্বীনদার কোনো ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে। মানে শুধু ডাক্তার হলে হবে না, দ্বীনের বুঝওয়ালা ডাক্তার লাগবে।
মেয়েদের ক্ষেত্রে অনেক মেয়েলী বিষয় থাকে যেটা একটা পুরুষ ডাক্তারের পক্ষে বোঝা খুব কঠিন।
এত গেলো একটা দিক। আরো অসংখ্য দিক আছে।
হসপিটালে বা অসুস্থ অবস্থায় মানুষ খুব নাজুক থাকে। তখন একজন প্র্যাক্টিসিং ডাক্তার যদি তাকে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেন, সেটার কার্যকারিতা অনেক অনেক বেশী হয়। Presence As a Muslima কনসেপ্টটা এইসময় খুব জরুরী। শুধু একজন প্র্যাক্টিসিং ডাক্তার দেখেই কেউ ইসলামের ব্যাপারে আগ্রহী হতে পারে। এছাড়াও একজন মুসলিম প্র্যাক্টিসিং ডাক্তার মানুষকে ইসলাম বিরোধী সিদ্ধান্ত না নেয়ার ব্যাপারে প্ররোচিত করতে পারেন। যেমন-এবোরশন।
আমাদের ১ম অতিথি রুকাইয়া আপু রংপুর মেডিক্যাল থেকে MBBS শেষ করার পর প্রথমে জার্মানী, তারপর এখন UK তে আছেন। ব্যক্তিজীবনে দুই সন্তানের মা। কিভাবে ব্যালেন্স করছেন ঘর এবং বাহির? আসলে কি ব্যালেন্স করা সম্ভব? কেমন অভিজ্ঞতা হয়েছে মুসলিম নারী হিসেবে অমুসলিম দেশে কাজ করতে? এসব গল্প শুনেছি আমরা এই পর্বে।
রুকাইয়া আপুর ব্যক্তিত্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক ছিল তিনি একটা Broad, holistic দৃষ্টিভঙ্গি থেকে জীবনটা দেখতে পারেন এবং জীবনের প্রয়োজনে ব্রেক নিতে কখনো দ্বিধা বোধ করেন না।সংসার সন্তান সামলানো নিজেই একটা ফুলটাইম কাজ। এটার সাথে যদি কেউ সমাজের কোনো ক্ষেত্রে অবদান রাখতে চান তাহলে তাকে অবশ্যই বুঝতে হবে When and where to take a pause/ break.
ফ্লেক্সিবিলিটির এই বুঝ/ বোধ থাকাটা আজকের সময়ে মেয়েদের জন্য খুব জরুরী। সব একসাথে পাওয়া সম্ভব না, পাওয়া জরুরীও না। এগিয়ে যেতে জানতে হবে অতীতকে পিছনে ফেলে। রুকাইয়া আপু বারবার বলছিলেন যে, ”আমি জীবনে NO Regret নীতিতে বিশ্বাসী, বাচ্চাদেরকেও এই বুঝ দিতে চাই।
আমাদের ২য় অতিথি নাঈমা আপা, কাঁচ ভেবে হেলায় ফেলে রাখা হীরক খণ্ডের একটা ক্লাসিক্যাল উদাহরণ। আমাদের চারপাশে নাম না জানা অনেক রত্ন লুকিয়ে আছেন যারা ফেসবুক সেলিব্রেটি নন বলে হয়তো তাদের কাছ থেকে শেখার কথা আমাদের মাথায় আসে না। কিন্তু উনার Thought Process থেকে জীবনের ব্যাপারে অনেক নতুন Perspective শেখার আছে।
USA র ছোট্ট একটা শহরে হিজাব নিয়ে আপার মেয়ের যে অভিজ্ঞতা আছে তা মোটামুটি দুঃসাহসিক ব্যাপার। সেটা শুনলেই বোঝা যায় যে বাচ্চা বড় করার জন্য মায়েদের মাঝে চিন্তার স্বচ্ছতা আর প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাস কতটা জরুরী।
এই দুজন অতিথির গল্পের রেকর্ডিং পেতে হলে মেসেজ দিতে পারেন আমাদের পেইজের ইনবক্সে।